বাংলাদেশে যে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের কেনাবেচা হয় তার একটা বড় অংশ আসে যাত্রীদের মাধ্যমে এবং চোরাই পথে এর ফলে বিরাট এই স্বর্নের ব্যবসা থেকে সরকার কোন শুল্ক পায় না। এ সমস্যা থেকে উত্তরনের জন্য বাংলাদেশে সরকার বৈধ ভাবে স্বর্ন আমদানির লাইসেন্স বিতরণ শুরু করেছেন।
এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক স্বর্ণ আমদানির জন্য লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনপত্র বিতরণ শুরু করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলছিলেন, এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা জামানত দিয়ে ৪৭ প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছিল পেয়েছে ১৮ টি, ২৯ টিরই জামানত গচ্চা এ বিষয় নিয়ে তিনি বলেন যে প্রতিষ্ঠান গুলো বাদ পড়েছে তারা আমাদের শর্ত পুরন করতে পারে নি।
তবে তিনি আশ্বস্ত করেন এই বলে যে লাইসেন্স নিয়ে আমদানি চালু হলে মানুষ আর হয়রানির শিকার হবেন না। তিনি আরও বলেন যদি সঠিক শুল্ক দেয়া হয়, তাহলে এখানে অন্য কোন সমস্যা থাকার কথা না "বরং এই লাইসেন্স দেয়ার ফলে ব্যক্তি পর্যায়ে মানুষ হয়রানি মুক্ত হবে । এবং সরকার লাভবান হবে কারণ সরকার এখান থেকে শুল্ক পাবে।
এই লাইসেন্স নিতে হলে এক কোটি টাকার মূলধন, ট্রেড লাইসেন্সসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লাইসেন্স থাকতে হবে এবং ব্যাংকে অফেরতযোগ্য পাঁচ লক্ষ টাকা পে অর্ডার হিসেবে জমা দিতে হবে। এই আবেদনপত্র যেকোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি নিতে পারেন।
এদিকে, বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন সরকারি উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও দুটি ইস্যুকে তুলে ধরেছেন তারা। তারা বলছে, প্রথমেই সরকারকে সহনশীল মাত্রায় শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে। তা না হলে ক্ষতির মুখে পড়বে ব্যবসায়ীরা। এই সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলছিলেন, বাংলাদেশে সোনার দাম বেশি হলে মানুষ ভারতে গিয়ে সোনা কেনে। "সেজন্যই আমরা বলছি, একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সঙ্গতি রেখে শুল্ক নির্ধারণ করতে হবে।
ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে সাধারণত স্বর্ণের দাম বাংলাদেশের চেয়ে কম। ব্যাংক থেকে ইস্যু করা পিওর সোনার ওপর সরকার একটা শুল্ক বসায়। সেটাতেও দাম কিছুটা বাড়ে, তিনি আরো বলছিলেন,। আবেদনকারী ৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে একটি ব্যাংকসহ ১৮ প্রতিষ্ঠানকে ডিলারশিপ লাইসেন্স দেওয়া হয়। প্রতিটিকে দুই বছরে জন্য এই লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তবে সোনা আমদানিতে প্রতি পদে পদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আলাদা অনুমোদন নিতে হবে।
লাইসেন্স পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মধুমতি ব্যাংক, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, জুয়েলারি হাউস, রতনা গোল্ড, অরোসা গোল্ড করপোরেশন, আমিন জুয়েলার্স, শ্রীজা গোল্ড প্যালেস লিমিটেড, জরোয়া হাউস লিমিটেড, মিলন বাজার, এসকিউ ট্রেডিং, এমকে ইন্টারন্যাশনাল, আমিন জুয়েলার্স, বুরাক কমোডিটিস এক্সচেঞ্জ, গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড জুয়েলার্স, রিয়া জুয়েলার্স, লক্ষ্মী জুয়েলার্স, বিডেক্স গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ড ও ডি ডামাস দ্য আর্ট অব গ্যালারি। এক তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ২০ থেকে ৪০ টন সোনা লাগে, যার বড় অংশই আসে বিদেশফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের আনা সোনা থেকে। এ ছাড়া কিছুটা আমদানি হয় এবং পুরোনো সোনা গলিয়েও চাহিদা মেটানো হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা তাঁদের মজুত সোনার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেন না। আবার জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীরা সোনা আমদানি করেন না। এমন অবস্থায়ই লাইসেন্স প্রদানের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অবশেষে বলা যায় বাংলাদেশ সরকার এ উদ্যোগ গ্রহন এর পূর্বে সাধারণ যাত্রীদেএ মাধ্যমে স্বর্ন বাংলাদেশ এ আসতো কিন্তু এখন লাইসেন্স প্রথা চালু হওয়ার কারণে বৈধ ভাবে স্বর্ন আমদানির করা শুরু হয়। তবে প্রতিটি পর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আপনি যদি সরকার এর সকল শর্ত পুরন করতে পারেন তাহলে অবেদন করতে পারেন।